চঞ্চল মনকে শান্ত করা ও মাথা ঠান্ডা রাখার সরল উপায় / A simple way to calm the restless mind and keep a cool head

বিজয়া (ভাং) তন্ত্র

এটিকে সাধারণ ভাষায় ভাং অথবা ভঙেরা বলা হয়। নদীর ধারে অবস্থিত জঙ্গলে এই গাছটি অতিমাত্রায় পাওয়া যায়। এই চারাগাছটির প্রধান প্রয়োগ মানসিক শান্তি ও শারীরিক সৌন্দর্যের জন্য করা হয়, কিন্তু এটি অধিকাংশ মাত্রায় নেশার জন্য প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। ভাং (বিজয়া) কিছু লাভদায়ক প্রয়োগ নিম্নে দেওয়া হল —-

চৈত্র মাসে প্রতিদিন সকালে মৌরি,বাদাম,শুকনো আঙ্গুর,গোলমরিচ,এলাচ, গুলাব,কেশর,দুধ ও চিনিতে অল্প পরিমানে বিজয়া মিশিয়ে এক গ্লাস মাত্রায় খেয়ে নিলে এটা মস্তিষ্কের শিরা-উপশিরাকে সচল ও সবল করে দেয়, কিন্তু এর প্রয়োগ নেশার জন্য করা উচিত নয়। শুধুমাত্র আট রত্তি ভাঙের প্রয়োগ লাভদায়ক হয়। এতে ধারণা,চিন্তাধারা,কল্পনা ও স্মরণশক্তির বৃদ্ধি হয়। এই প্রয়োগটি বুদ্ধিজীবীদের জন্য (যারা কাজকর্ম করে) তাদের জন্য অনেকটাই লাভদায়ক সিদ্ধ হয়।

উপরোক্ত নিয়মে যদি কোনও ব্যক্তি সম্পূর্ণ বৈশাখ মাস বিজয়া সেবন করে তাহলে তার রক্ত ও স্নায়ু বিষের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকে। খাওয়া-দাওয়া থেকে (food poison) বিষাক্ততা এই ক্রিয়ার সাহায্য নষ্ট হয়ে যায়।

জ্যৈষ্ঠ মাসে উপরোক্ত নিয়মে ভাঙের শরবৎ সেবন শারীরিক সৌন্দর্যকে বৃদ্ধি করে। এর সেবন সকালে সূর্য উঠার আগে করতে হবে।

আষাঢ় মাসে বিজয়া (ভাঙের) সেবন করলে স্বাস্থ্যে জৌলস দেখা যায়।

  • রুদ্রবন্তী ও ভাঙকে গুঁড়ো করে গোল্লা তৈরী করুন। সরবত তৈরী করে পান করলে মস্তিকের সতেজতা ও শরীর ভালো করতে সাহায্য করে ও অফুরন্ত যৌন শক্তির সহায়ক হয়।
  • ভাঙের গুঁড়ো অগ্রহায়ণ মাসে ঘী,চিনির সাথে সেবন করলে চোখের দৃষ্টি বৃদ্ধি হয়।
  • পৌষ মাসে কালো তিল ও ভাঙের সেবন চোখের দৃষ্টি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • মাঘ মাসে অশ্বগন্ধার শিকড় অথবা  রসের সাথে ভাঙের গুঁড়ো মিশিয়ে সেবন করা উচিত। এর প্রয়োগে শরীরে শক্তির সঞ্চার হয়।
  • ফাল্গন মাসে ভাঙের গুঁড়ো অথবা রসের সাথে আমলা পিষে সেবন করলে শরীরে সম্পূর্ণ স্নায়ু তন্ত্র সতেজ থাকে। বাতের ব্যথার নিরাময় হয় ও শরীরে রক্ত সঞ্চালন সঠিক উপায়ে হয়। শরীরে সক্রিয় ভাব ও গতিশীল রাখতে এই প্রয়োগটি খুবই কার্যকরী হয়।
  • বারো মাস পর্যন্ত বিভিন্ন ডোজের সাথে ভাঙের সেবনকে ‘বিজয় কল্প’ বলা হয়। যদি কোনও সুস্থ ব্যক্তি বিভিন্ন ডোজের সাথে সম্পূর্ণ বছরে ভাঙের সেবন করে,তাহলে সে সমস্ত শারীরিক ত্রূটি থেকে মুক্ত হয়ে পূর্ণ শারীরিক শক্তি,সৌন্দর্য ও অফুরন্ত পুরুষত্বের (স্বাস্থ্যবান পুরুষ) অধিকারী হয়ে যায়। শিরা-উপশিরায় রক্ত সঞ্চালনের ফলে রক্ত সম্পর্কিত সমস্ত ব্যাধি সেরে যায়।

You may also like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *