রাহু কখনই ব্রাহ্মণ জাতিকে কষ্ট দেয় না কিন্তু যে ব্রাহ্মণ মদ্যপান করে, তাকে অবশ্যই কষ্ট দেয়৷ এর কারণ হল যখন সমুদ্রমন্থনের পর শ্রীহরি বিষ্ণু সমুদ্র থেকে প্রাপ্ত অমৃতকে রাক্ষসগণ থেকে বাঁচাবার জন্য সুন্দরী স্ত্রীর রূপ ধারণ করে দেবতাদের অমৃতপান করাতে শুরু করলেন৷ কিন্তু রাহু নামক রাক্ষস বিষ্ণুর এই কাজটি সম্পূর্ণ রূপে বুঝে নিয়েছিলেন ও দেবতাদের রূপ ধারণ করে তাদের সারিতে বসে গিয়েছিলেন৷ বিষ্ণু তাকে চিনতে পারলেন না ও তাকেও অমৃতপান করিয়ে দিলেন৷ সূর্য-চন্দ্র রাহুর এই অভিসন্ধি বুঝে গিয়েছিলেন৷ তারা ভগবান বিষ্ণুকে এই বিষয়ে সাবধান করলেন৷ তখন তৎক্ষণাৎ ভগবান বিষ্ণু নিজের সুদর্শন চক্র দ্বারা রাহুর মাথা কেটে ফেললেন৷
সেই কাটা মাথা মলয়ম (দক্ষিণ ভারত) নামক স্থানে পড়েছিল৷ সেই মাথাটি সর্বপ্রথম একমিতী নামক ব্রাহ্মণ দেখেছিলেন৷ জীবিত মাথাটিকে দেখে ব্রাহ্মণ কিছুক্ষণের জন্য কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গিয়েছিলেন ও পরে তাঁর পরিচর্যা করেছিলেন৷ সেই কাটা মাথাটি ব্রাহ্মণকে দেখতে দেখতে ছায়াতে পরিবর্তিত হয়ে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল৷ অদৃশ্য হবার সময় রাহুর সেই কাটা মাথাটি প্রসন্ন হয়ে ব্রাহ্মণকে বর দিলেন যে তার ছায়ারূপ গ্রহ কখনও ব্রাহ্মণ জাতিকে কষ্ট দেবে না অর্থাৎ তাদের জন্য অনিষ্টকারক হবে না৷ সেই একমিতী নামক ব্রাহ্মণটি রাহুর একটি সুসজ্জিত মন্দির নির্মাণ করলেন৷ তিনি যতদিন বেঁচেছিলেন, ততদিন সেই মন্দিরের সেবা করে গিয়েছিলেন৷ এখনো বংশপরাক্রম অনুযায়ী কিছু ব্যক্তি মন্দিরের প্রধান পূজারী হয়ে থাকেন৷ দক্ষিণ ভারতে এটা মানা হয় যে, সূর্য চন্দ্র থেকে বদলা নেবার জন্য রাহু শ্বেত নাগের রূপ ধরে চন্দ্র ও কেতুকে লাল নাগের রূপ নিয়ে সূর্যকে গ্রাস করে থাকে৷